বান্দরবানের ২৩০টি পাহাড়ি ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠীর ভূমিহীন পরিবার পাচ্ছেন স্বপ্নের মাচাংঘর। এলাকার ঐতিহ্য ও কৃষ্টির সাথে সঙ্গতি রেখে এসব মাচাংঘর নির্মিত হচ্ছে। প্রতিটি মাচাংঘর নির্মাণের প্রাক্কলন ব্যয় ধরা হয়েছে দুই লাখ ৫৫ হাজার ৬৭০ টাকা।
চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মো.আশরাফ উদ্দিন গত ৩১ অক্টোবর বান্দরবান সদর উপজেলার জামছড়ি ইউনিয়নে মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য মাচাংঘর নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করেছেন।
পরিদর্শনকালে বিভাগীয় কমিশনার মাচাংঘরের কাজের অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
এসময় সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, জনগণের চাহিদার ভিত্তিতে সেমি পাঁকা ঘরের পরিবর্তে পার্বত্য এলাকার ঐতিহ্য ও কৃষ্টির সাথে সঙ্গতি রেখে তৈরি হচ্ছে মাচাংঘর।
আরও পড়ুন: বাঘিনী রূপনাকে বাড়ি উপহার দেয়ার ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর
জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি জানান, জনগণের চাহিদার ভিত্তিতে এবং এলাকার জনপ্রতিনিধিদের মতামত নিয়ে এসব মাচাংঘর নির্মাণের প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠানো হয়। এই প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে একটি প্রতিনিধিদল বান্দরবান পরিদর্শন শেষে মাচাংঘর নির্মাণের যৌক্তিকতা বিবেচনায় এনে বিষয়টি অনুমোদন করে। ভূমিহীন পরিবারের জন্য গৃহ নির্মাণ প্রকল্পের চতুর্থ পর্যায়ের আওতায় বর্তমানে বান্দরবান সদর উপজেলায় ৯টি, আলীকদম উপজেলায় ১টি, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় ১৫ টি রোয়াংছড়ি উপজেলার ৪৫টি, লামা উপজেলায় ১৫টি, রুমা উপজেলায় ১০০টি এবং থানছি উপজেলায় ৪৫টি মাচাংঘর নির্মিত হচ্ছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বান্দরবানে ৪১৩৩টি ভূমিহীন পরিবারের জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় গৃহ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৩৫৬০টি গৃহনির্মাণের জন্য ৭০ কোটি ৩৩ লাখ ৭ হাজার ১০০ শত টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে।
ইতোমধ্যে ২৯৬৮টি সেমিপাকা ঘর ভূমিহীন পরিবারের মাঝে হস্তান্তর করা হয়েছে। বর্তমানে ২৩০টি মাচাংঘরসহ সর্বমোট ৫৯২টি গৃহ নির্মাণের কাজ এগিয়ে চলছে।
এদিকে পাহাড়িদের জন্য সেমিপাকা গৃহের পরিবর্তে মাচাংঘর নির্মাণের উদ্যোগটি সর্বমহলে প্রশংসিত হচ্ছে।
বান্দরবান সদর উপজেলার ৬ নম্বর জামছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যসিংশৈ জানান, প্রত্যন্ত এলাকার পাহাড়ি জনগণ সেমিপাকা ঘরের চেয়ে মাচাংঘরকে বেশি পছন্দ করছেন। এতে মাচাং এর নীচে গৃহ পালিত পশু পালনসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী সারা বছর সংরক্ষণ করা যায়। পরিবেশবান্ধব এ মাচাংঘরে আলো বাতাস চলাচলের অবারিত সুযোগ থাকে।
তিনি বলেন, তার ইউনিয়ন পরিষদে সর্বপ্রথম মডেল হিসেবে নির্মিত হচ্ছে মাচাংঘর।
তবে এখাতে সরকারি বরাদ্দ যথেষ্ট নয় উল্লেখ করে চেয়ারম্যান বলেন, একটি টেকসই মাচাংঘর নির্মাণের জন্য কমপক্ষে চার লাখ টাকা বরাদ্দ করা প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর ঈদুল আজহার উপহার